Dehobazi By Arfin Rumey
আরফিন রুমি। জনপ্রিয় সংগীতপরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী। ভালবাসা দিবসে প্রকাশিত হচ্ছে তার ফিচারিংয়ে মিশ্র অ্যালবাম ‘দেহবাজী’। এই অ্যালবাম, সংগীতের বর্তমান অবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন আমাদের সময়ের সঙ্গে।
ভালবাসা দিবসে প্রকাশ হচ্ছে ‘দেহবাজী’। অ্যালবামের গানগুলো নিশ্চয় শ্রোতার মনে প্রেম জাগাবে?
ভালবেসেই গানগুলো করেছি । এগুলো শুনে শ্রোতার মনে প্রেম জাগবে কি-না সেটা এখন বলতে পারছি না। কারণ প্রেম-ভালবাসা স্বর্গীয়। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা ছাড়া কারো মনে প্রেম-ভালবাসা আসা সম্ভব নয়।
অ্যালবামে গান থাকছে কয়টি?
মোট পাঁচটি গান দিয়ে সাজানো হয়েছে অ্যালবামটি। টাইটেল গানসহ ‘প্রার্থনা’ ও ‘সঙ্গেই চলো’ গান তিনটি লিখেছেন জাহিদ আকবর। এরমধ্যে ‘দেহবাজী’ শোনা যাবে আমার কণ্ঠে। আর ‘প্রার্থনা’ গেয়েছেন কাজী শুভ ও স্বরলিপি এবং ‘সঙ্গেই চলো’য় কণ্ঠ দিয়েছেন তানভীর তারেক। বাকি দুটি গান লিখেছেন সোমেশ্বর অলি ও তারেক আনন্দ। তারেক আনন্দের লেখা ‘সুখ’ শিরোনামের গানটিতে আমার সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন খেয়া। আর সোমেশ্বর অলির লেখা ‘দোনামোনা’ গানটিতে ঐশীর সঙ্গে আমার কণ্ঠ শোনা যাবে।
দীর্ঘদিন পর আপনার সংগীতায়োজনে মিশ্র অ্যালবাম প্রকাশ হচ্ছে। প্রত্যাশা কেমন?
ভক্ত-শ্রোতাদের ভালবাসা পেলেই চলবে। ভালবাসা দিবস সুন্দর একটি দিন। এ দিনটি উপলক্ষে প্রকাশ হচ্ছে ‘দেহবাজী’। তাই ভালবাসা চাই। সত্যি বলতে কী, প্রত্যাশা নিয়ে আমি কাজ করি না। আমি গানের মানুষ, গান ভালবাসি। ভালবেসে গান করি, আর সারাজীবন করতে চাই।
এখন তিন গানের (ইপি) অ্যালবাম প্রকাশ হচ্ছে। বিষয়টি কিভাবে দেখেন?
এটা কিন্তু নতুন কিছু নয়। ইপি অ্যালবাম প্রথমে হাবিব ভাই প্রকাশ করেছিল। তারপর আমিও ‘কিছু কথা আকাশে পাঠাও’ শিরোনামে একটি অ্যালবাম প্রকাশ করেছিলাম। তবে আমার কাছে শ্রোতারা বেশি গান শুনতে চায়। তাই আমি বছরে একটি হলেও পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম উপহার দেব।
সংগীতের বর্তমান অবস্থা কেমন?
অন্যদের গান খুব বেশি শুনি না। সংগীতের অবস্থা আগেও ভাল ছিল, এখনও ভালো আছে। সমস্যা হচ্ছে, আমাদের আত্মিক চিন্তাভাবনা ভালো না। আগে নিজেদের ভাল হতে হবে।
আপনার সুর, সংগীতে অনেকেই জনপ্রিয় হয়েছে। নতুনদের নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে?
আমার সুরে অনেক গান জনপ্রিয় হয়েছে, এটা নিয়ে অহংকার নয়, গর্ব হয়। আমার ভেতরে কখনো লোভ কাজ করেনা। ফলে ভালো সুরগুলো অন্যদের গিয়ে গাওয়াই। গান তৈরি করা আমার পেশা। সুরের সাধনায় মত্ত থাকা আমার নেশা। সুর এমনিতেই চলে আসবে। নতুনদের সঙ্গে কাজ সব সময়ই করি। আগামীতেও করবো।
অডিও এবং চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালক হিসেবেও আপনি সফল। তারপরও চলচ্চিত্রের গানে কী কম কাজ করছেন?
কাজ কম করছি না। যতটুকু করা দরকার ঠিক ততটুকুই করছি। কারণ আমি কখনোই নিজেকে সস্তা করতে রাজি নই। অনেকে চলচ্চিত্রের গান করার কথা বলে, গানগুলো প্রকাশ করে অডিওতে। অনেকে আবার কথা ঠিক রাখে না। যারা আমাকে সঠিক মূল্যায়ন না করে, আমি তাদের কাজ করি না। সম্প্রতি মুস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘জান্নাত’ চলচ্চিত্রের কাজ করলাম।
বছরটা কী আপনার কাছে ঘুরে দাঁড়ানোর?
ঘুরে দাঁড়াবো কি দাঁড়াবো না, এসব নিয়ে ভাবি না। ধারাবাহিকভাবে কাজ করতে চাই। ২০১৭ হোক কিংবা ২০২৭ সব বছরই আমার কাছে একরকম।
জাগো-এফএমে আরজে হিসেব নাম লেখালেন। বিশেষ কোন কারণ?
আরজে হিসেবে নাম লিখিয়েছি, নিজের কথা বলার জন্য। আমাদের দেশে অনেকে উপস্থাপনা করছেন। তাদের উদ্দেশ্যটা আমার ভাল লেগেছে। এখানে নতুন শিল্পীরা আসবে, তিন সপ্তাহ কমপিটিশন চলবে। এরপর আমার কম্পোজিশনের গান গাওয়ার সুযোগ পাবে। গান প্রচার হবে জাগো-এফএমে।
ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কেমন আছেন?
ভাল আছি। আমার বড় সন্তান আরিয়ানকে মিস করি। আইনের মারপ্যাচ। মায়ের সঙ্গে থাকতে হচ্ছে। বড় হয়ে আমার কাছে চলে আসবে ঠিকই।
‘পারিবারিক ঝামেলা’ আপনার ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলেছে। এটা কি স্বীকার করেন?
পারিবারিক ঝামেলা প্রত্যেকের জীবনেই থাকে। কিন্তু আমার ঝামেলটা এত মানুষ জানতে পেরেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তারপরও আমি আইয়ুব বাচ্চু ভাইয়ের গানের কথায় বলতে চাই, নিজ ভূবনে চির দুঃখী, আসলে কেউ সুখী নয়। তবে আমি কিন্তু এখন সুখী। স্ত্রী কামরুন ও সন্তানকে নিয়ে ভালো আছি।